“অপরচুনিটিস হাব” বিশ্বব্যাপী উদ্ভাবন, উদ্যোক্তা তৈরি এবং তরুণদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টিকারী হিসাবে কাজ করে আসছে। “অপরচুনিটিস হাব” ২০২০ সালের জন্য ১০০ প্রভাবশালী তরুণদের তালিকা প্রকাশ করেছে। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশের আইটি উদ্যোগতা পাভেল সরোয়ার ১০০ প্রভাবশালী তরুণদের এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এই পুরষ্কারের উদ্দেশ্য হল যুবকদের বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের জন্য অসামান্য কাজের জন্য স্বীকৃতি দেওয়া। পাভেল সামাজিক উদ্ভাবক বিভাগে নির্বাচিত হন। এই ১০০ প্রভাবশালী তরুণের তালিকায় মালয়েশিয়া প্রবাসী পাভেল সারওয়ার ।
তিনি তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা এবং যুব উন্নয়ননের মাধ্যমে সামাজিক ও নাগরিক সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সংস্থার সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন। তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিশেষত নাইজেরিয়া এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলিতে তরুণদের জন্য সামাজিক উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবক হিসাবে তাঁর কাজের জন্য স্বীকৃত হয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে পাভেল একজন উদ্যোক্তা, সামাজিক উদ্ভাবক, শিক্ষাবিদ গুগল সার্টিফায়েড প্রশিক্ষক। তার প্রতিষ্ঠান, কোডেক্স সফটওয়্যার সলিউশন প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে নাগরিকদের সমস্যা সমাধান এবং উদ্ভাবনের জন্য কাজ করে। বাংলাদেশ ছাড়াও কোডেক্স বর্তমানে নেপাল ও মালয়েশিয়ায় কাজ করছে।
এই তরুণ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ায় এসেছিলেন। তিনি আইটি ভিত্তিক সংস্থা ইয়ুথ হাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি স্কুল পর্যায়ে নতুনত্ব, তথ্য প্রযুক্তি এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করছে। বিশেষত মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তথ্য প্রযুক্তির শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। পাভেল মালয়েশিয়ার বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন স্কুল পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষায় কাজ করছেন। এছাড়াও, বিশ্বের ১৭ টি দেশে একটি ইয়ুথ হাবের ধারণা নিয়ে কাজ করছে।
সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের মধ্যে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরন এবং ঋতুস্রাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি দ্বারা প্রকাশিত বই “টাইগার বনাম কোভিড” বইয়ে তাকে নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। বইটি সেরা ৫০ টি উদ্যোগ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই ১০০ প্রভাবশালী তরুণের তালিকায় মালয়েশিয়া প্রবাসী পাভেল সারওয়ার এর স্থান হয়েছে।
পাভেল ২০১৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ব্রিটিশ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এর সংগঠন “দেয়ার ওয়াল্ডের্র” আমন্ত্রনে নারীদের মধ্যে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষায় কাজ করার জন্য বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছিলেন। পাভেল বিশ্বাস করেন যে মানসম্মত শিক্ষা কোন কিছুর জন্য থেমে থাকতে পারে না। তাই তিনি সবার কাছে মানসম্মত পৌঁছে শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে ডেমরা আইডিয়াল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি কমনওয়েলথ ইয়ুথ ইনোভেশন হাবের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক পরিচালক।
পাভেল দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গুগল পরিষেবা এবং গ্রুপের সাথে যুক্ত আছেন। তিনি একজন গুগল ম্যাপ বিশেষজ্ঞ, গুগল স্ট্রিট ভিউ ট্রাস্টেড এবং গুগল ক্রাউডসোর্সের একজন প্রতিনিধি। ২০১৭ সালে গুগলের আমন্ত্রণে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউতে গুগলের সদর দফতর পরিদর্শন করেছিলেন। গুগলের গ্রুপের পক্ষ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। গুগলের অফিসিয়াল ব্লগ, লোকাল গাইডস কানেক্টে বাংলাদেশকে নিয়ে “মিট দ্য কাপল দ্যাট গাইডস টুগেদার” শীর্ষক একটি ফিচার পোস্ট করা হয়েছিল।
২০১৮ সালে পাভেল গুগল ক্রাউডসোর্স থেকে সেরা দলনেতার পুরষ্কার পেয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেন। তরুণ আইটি উদ্যোক্তা পাভেল সরোয়ার বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে আরও সন্মানের সাথে উপস্থাপন করতে চান।