আমেরিকা ডিভি লটারি বা USA ডাইভারসিটি ভিসা আমাদের সবার পরিচিত ও আকর্ষণীয় একটি বিষয়। আমেরিকায় বসবাস করার সুযোগ পাওয়ার সহজ একটি মাধ্যম হল এই ডিভি লটারি। আমাদের পরিচিতদের মধ্যে কেউ না কেউ আছেন যিনি এই আমেরিকার ডিভি লটারি । USA ডাইভারসিটি ভিসা বা ডিভি ভিসা আবেদন করারা মাধ্যমে আমেরিকায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন।
USA প্রতি বছর গ্রিন কার্ড লটারি কর্মসূচির মাধ্যমে ৫৫,০০০ গ্রিন কার্ড ইস্যু করে থাকে। US ভিসার জন্য আবেদনকারীগণ গ্রিন কার্ড লটারি বা ডিভির মাধ্যমে আবেদন করেন। যারা USA ভিসার জন্য নির্বাচিত হবেন তারা তাদের পরিবারের সদস্যরা আমেরিকার অভিবাসী ভিসা পাবেন, যা তাদের আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাসের এবং কাজ করার আইনগত অনুমতি প্রদান করবে। কিভাবে ডিভির জন্য আবেদন করতে হয় তার বিস্তারিত আজকে আলোচনা করবো।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ডিভি লটারি বা USA গ্রিন কার্ড প্রোগ্রামে অংশগ্রহন করা যাচ্ছে না। আমেরিকা শুধু সেই দেশ গুলোতে ডিভি লটারি দিচ্ছে যেই দেশের নাগরিক আমেরিকায় কম থাকেন। গত ২০০৭ থেকে ২০১২ পর্যন্ত এই ৫ বছরে অনেক মানুষ ডিভি লটারির মাধ্যমে আমেরিকায় স্থায়ী হয়েছেন। যার ফলে বাংলাদেশের কোঠা শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও কিছু বাংলাদেশি নাগরিক ডিভি লটারিতে আবেদন করতে পারবেন। যা আমি এই পোষ্টে আলোচনা করবো।
ডিভি লটারির জন্য আবেদনের জন্য কি যোগ্যতা প্রয়োজন?
ডিভি গ্রিন কার্ড আবেদনের জন্য একজন আবেদনকারীকে অবশ্যই একটি যোগ্য দেশে জন্মগ্রহণ করতে হবে। যোগ্য দেশ বলতে সেই দেশগুলিকে বোঝায় যে দেশের নাগরিক আমেরিকাতে কম থাকেন। যদি কোন আবেদনকারী এমন কোন দেশ থেকে আবেদন করেন যে দেশের নাগরিক আমেরিকাতে বেশি থাকেন তবে তার ডিভি লটারির আবেদন বাতিল করা হবে। যে দেশগুলি থেকে ডিভির জন্য আবেদন করা যাবে না সে দেশ গুলো হল, কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, মেক্সিকো, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, জামাইকা, ভারত, হাইতি, গুয়াতেমালা, যুক্তরাজ্য (উত্তর আয়ারল্যান্ড বাদে), এলসালভাদর।
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র,
চীন (কেবলমাত্র মূল ভূখণ্ড), কলম্বিয়া, ব্রাজিল। আপনি যদি এই দেশ গুলো ব্যতিত অন্য কোন দেশের নাগরিক হন তবে ডিভি বা USA গ্রীন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
USA’র ডিভি বা গ্রিন কার্ড লটারি এমন একটি কর্মসূচি যা আমেরিকায় গত ৫ বছরে ৫৫,০০০ এরও বেশি বাসিন্দাকে ভিসা দিয়েছে। ডিভি বা গ্রিন কার্ড লটারি প্রতি বছর আমেরিকাকে নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন সেবা সরবরাহ করে। সুতরাং আপনি যদি USA’র গ্রীন কার্ড বা ডিভি লটারি পেতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই সঠিক সময়ে আবেদন করতে হবে।
USA ইমিগ্রেশনে আপনার আবেদন পত্রটি পরীক্ষা করুন। আপনি যোগ্য প্রার্থী হলে USA গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আপনি কখন গ্রিন কার্ড লটারির জন্য আবেদন করতে পারবেন?
গ্রিন কার্ডের চাহিদা সরবরাহের চেয়ে অনেক বেশি। যারা বর্তমানে USA’তে আছেন তাদের স্বামী, স্ত্রী, বা সন্তান এমনকি যার তাদের হয়ে কাজ করেন অত্যন্ত দক্ষ এমন শ্রমিক তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। আপনি যদি চান তবে তাদের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটটি https://dvprogram.state.gov ঘুরে দেখে আসতে পারেন। আপনি যদি মনে করেন আপনি যোগ্য প্রার্থী হন তবে আপনি ডিভি বা USA’র গ্রিন কার্ড ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ডিভি আবেদনের সময় আপনাকে অবশ্যই প্রতিটি তথ্য সঠিক দিতে হবে। জাল তথ্য দিয়ে আবেদন করার চেষ্টা করবেন না। বা একই নামে একের অধিক আবেদন করতে পারবেন না। তাহলে আপনার আবেদন বাতিল হয়ে যাবে।
কিভাবে একজন বাংলাদেশী নাগরিক USA ডিভি লটারির জন্য আবেদন করতে পারবেন?
বাংলাদেশি নাগরিকরা সরাসরি গ্রিন কার্ড প্রোগ্রাম বা ডিভি লটারির জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তবে কেবলমাত্র যোগ্য দেশের নাগরিকগন তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদন করতে পারবেন। আপনি জন্ম সুত্রে বাংলাদেশের নাগরিক কিন্তু আপনার পিতা বা মাতা কি এমন কোন দেশের নাগরিক যে দেশ থেকে ডিভির জন্য আবেদন করা যাবে? আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলেই কেবল আপনি আপনার পিতা বা মাতার জন্মস্থান অনুসারে ডিভির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সকল বাংলাদেশিদের জন্য ডিভি লটারি বন্ধঃ
অনেকে বৈধ ভাবে ডিভি লটারির মাধ্যমে আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। সেই স্বপ্ন পূরণের একটি বড় উপায় হল ডিভি লটারি। তবে বাংলাদেশি নাগরিকরা আমেরিকার ডিভি লটারি । USA ডাইভারসিটি ভিসা বা ডিভি ভিসা আবেদন করতে পারবেন না। ডিভি লটারি কর্তৃপক্ষ তার ওয়েব সাইটে এই তথ্যই জানিয়েছেন।
তবে বাংলাদেশে বিভিন্ন অসাধু চক্র ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডিভি লটারির মিথ্যা খবর ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আপনারা তাদের এই ফাদে পা দিবেন না।
ডিভি লটারি আবেদনের জন্য কি কি তথ্য প্রয়োজন?
সাবধানতার সাথে ১০০% সঠিক তথ্য দিয়ে ডিভি ওয়েব সাইটে আবেদন ফর্মটি পূরণ করুনঃ
- আবেদনকারীর নাম,
- জন্ম তারিখ,
- জন্মের স্থান (নগর বা জেলা যেখানে প্রার্থী জন্মগ্রহণ করেছেন বা জন্ম নিবন্ধন কার্ডে উল্লিখিত হিসাবে),
- দেশের নাম,
- আবেদনকারীর ছবি,
- পুরো ঠিকানা,
- বর্তমানে কোন দেশে বসবাস করছেন,
- ফোন নম্বর (যদি থাকে),
- ইমেল ঠিকানা (যদি থাকে),
- সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা,
- বৈবাহিক অবস্থা,
- সন্তানের সংখ্যা (যদি থাকে),
- স্ত্রীর তথ্য (যদি আবেদনকারী স্বামী হন তবে তার স্ত্রীর তথ্য এই ঘরে দিতে হবে)
- বাচ্চার তথ্য (যদি ২১ বছরের নিচে কোন বাচ্চা থাকে)
এই সমস্ত তথ্য সঠিক ভাবে দিয়ে আপনার আবেদনের কাজ সম্পন্ন করুন।
এভাবে আপনি আপনার ডিভি লটারির আবেদনের কাজ শেষ করতে পারবেন। এই সম্পর্কে আরও কিছু জানতে চাইলে আমাদের কমেন্ট করুন। ভাল থাকবেন। ধন্যবাদ।